Update

***French President Hosts Reception for Human Rights Defenders at Élysée Palace***Human Rights Lawyer Shahanur Islam Joins Hands with ARDHIS for Bangladeshi LGBTQI Asylum Seekers in France***New Platform to Fight Discrimination Against LGBTQI+ Community in Bangladesh***Human Rights Advocates Meet with French Ambassador to the Council of Europe ***Bangladesh Needs to Make Further Progress Towards Gender Equality***JusticeMakers Bangladesh calls for justice and protection for religious minorities in Bangladesh***French Human Rights Ambassador Honours HR Defenders at Paris***JusticeMakers Bangladesh is deeply concerned over the harassment against student of Islamic University in Bangladesh***JusticeMakers Bangladesh urges to withdraw the ban of Prity's book "Jonmo O Jonir Itihas" immediately***JusticeMakers Bangladesh expresses deep concern, condemnation and protest over the vandalism 14 Hindu temples in Thakurgaon***JusticeMakers Bangladesh deeply concern over the threat of crossfire to the lawyer Aminul Gani Tito in Dhaka***JusticeMakers Bangladesh gravely concerns over the attacked on CEO of BELA***JusticeMakers Bangladesh gravely concerns over the disappearance of lawyer in Dhaka***JusticeMakers Bangladesh Urges Immidiate Release of Arrested Transgenders in Dhaka***JusticeMakers Bangladesh concerns over viciously attacked on lawyer Abdur Rashid Mollah at Dhaka***JusticeMakers Bangladesh gravely concerned over attacked on indigenous people at Bogura***JusticeMakers Bangladesh welcomes the decision of Metropolitan Magistrate to acquit four Transgenders in Dhaka***JusticeMakers Bangladesh Protests and concerns Over the Abduction and Torture of Two Trans-women in Meherpur***Shahanur Islam attended the 21st World Summit on Participatory Democracy at Grenoble, France***

Monday, October 10, 2022

মৃত্যুদণ্ড অপরাধ নির্মুলে কতটা কার্যকর?

অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সৈকত

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও খুন ও ধর্ষনের মত কিছু গুরুত্বর ও ঘৃনিত অপরাধ, যা কোন ব্যক্তির কখনো সংঘটন করা উচিত নয়, সেসকল অপরাধের জন্য রাষ্ট্র অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের মত গুরুদণ্ড প্রদান করে থাকে। যদিও সাধাররণত প্রাপ্ত বয়স্ক গুরুত্বর অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ডের মত গুরুদণ্ড প্রদান করা হলেও বিশ্বের কিছু কিছু দেশে ১৮ বছরের কম বয়সি অপরাধীকেও মৃর্ত্যুদণ্ডের মত নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং অবমাননাকর শাস্তি প্রদান করে থাকে।   

যদিও এখন বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র মৃর্ত্যুদণ্ডের মত নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি বিলোপের পক্ষে তারপরও বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ৪২টি দেশে এখনো মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়ে থাকে। যদিও তাদের মধ্যে ৮টি দেশে সাধারণ কোন অপরাধের জন্য নয় বিশেষ প্রকৃতির গুরুত্বরও ঘৃণিত অপরাধের জন্য মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে বিশ্বের প্রায় ৮০% অর্থাৎ১৫৫টি রাষ্ট্র আইনগত ভাবে মৃর্ত্যুদণ্ড সম্পূর্ণরূপে বাতিল করেছে বা বাস্তবিকভাবে মৃর্ত্যুদণ্ড কার্যকর করার উপর  স্থগিতাদেশ প্রদান করেছে।

যদিও নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির (আইসিসিপিআর) এর ৬ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবনের অধিকার মৃত্যুদণ্ডকে নিষিদ্ধ করে না এবং এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধীতা বা বিলম্বিত বা বাধা প্রদান করে না। তা সত্ত্বেও, মৃত্যুদণ্ড রহিত করার একমাত্র আন্তর্জাতিক চুক্তি হল আইসিসিপিআর এর দ্বিতীয় ঐচ্ছিক প্রোটোকল, যা এখনও পর্যন্ত ৮৮ টি রাষ্ট্র অনুমোদন করেছে।

যদিও মৃত্যুদণ্ড আসলে সমাজের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত কার্যকর হিসাবে কাজ করে এমন কোনও প্রমাণ নেই তবুও মৃত্যুদণ্ডের সমর্থকরা যদিও মৃর্ত্যুদণ্ডকে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে কার্যকরী বলে মনে করেযদিও বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে যে অপঅরাধ নিয়ন্ত্রণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের চেয়ে মৃর্ত্যুদণ্ড কোনভাবেই কার্যকর নয়।

মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক সময় নিরপরাধ ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করার ঝুঁকি থেকে যায় কারণ কোন বিচার ব্যবস্থাই সম্পূর্ণ নির্ভুলতার সাথে কাজ করে নাএই কারণে মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকারের জন্য একটি অগ্রহণযোগ্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমনকি যদি অপরাধ প্রমানিতও হয়, তবুও মৃত্যুদণ্ড একটি নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং অবমাননাকর শাস্তি। তাছাড়া, মৃত্যুদণ্ড শুধুমাত্র নির্যাতন থেকে মুক্ত থাকার অধিকারই লঙ্ঘন করে না, এমনকি জীবনের অধিকারও লঙ্ঘন করে বলে যুক্তি দেওয়ার যতেষ্ট সঙ্গত কারণ রয়েছে। 

সার্বজনীন মানবাধিকারের মূলে রয়েছে মানুষের জীবন ও মর্যাদার অধিকার আর মৃর্ত্যুদণ্ড প্রদানের মাধ্যমে একজন মানুষের জীবনের এই অন্তর্নিহিত মূল্য কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে কেবল শাস্তি হিসাবে সমস্ত মানবাধিকার অস্বীকার করা রাষ্ট্রের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। 

সবশেষে, মৃত্যুদণ্ড মৌলিকভাবে বৈষম্যমূলক বলে মনে করা হয় কারণ অনেক গবেষণালগ্ধ পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, সমাজের সুবিধা বঞ্চিত পশ্চাদপদ গোষ্টী যাদের জন্য বিচার ব্যবস্থা সহজগোম্য নয় এবং যারা উচ্চ মানের আইনি প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম নয়, এমন আশিক্ষিত, সংখ্যালঘু ও দরিদ্র শ্রেনীর মানুষ মৃর্ত্যুদণ্ডের মত শাস্তি বেশী হয়ে থাকে। তাই বলা চলে মৃত্যুদণ্ড সমাজে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী কোন পন্থা নয়, বরং মৃর্ত্যুদণ্ড মানবাধিকারকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলে।

সামগ্রিকভাবে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মন্তব্য করেন যে একবিংশ শতাব্দীতে মৃত্যুদণ্ডের কোন স্থান নেই। এটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে সত্যকারণ অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২২০ জনের মৃর্ত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে, যেখানে ৩৯জন আসামী পক্ষে ডিফেন্স আইনজীবী ছিল না। তাছাড়া, কারণ অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এর বৈশ্বিক প্রতিবেদনে মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগের সময় বাংলাদেশের আদালত কর্তৃক আন্তর্জাতিক বিচারের মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

কর্নেল ল স্কুল এর তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ১৮০০জন অপরাধী মৃর্ত্যুদণ্ডের সাজা মাথায় নিয়ে কারাগারে অবস্থান করছিল। ২০২২ সালে মোট ২জন, ২০২১ সালে ৪জন, ২০২০ সালে ২জন, ২০১৯ সালে ১ জন, ২০১৭ সালে ৬ জন, ২০১৬ সালে ১০ জন, ২০১৫ সালে ৩ জন, ২০১৩ সালে ২ জন, ২০১২ সালে ১ জন, ২০১১ সালে ৫ জন, ২০১০ সালে ৯ জন, ২০০৯ সালে ৩ জন , ২০০৮ সালে ৫ জন এবং ২০০৭ সালে ৬ জন অপরাধীর মৃর্ত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বাংলাদশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

আজ ১০ আক্টোবর ২০২২,বিশ্ব মৃর্ত্যুদণ্ড বিলোপ দিবস। আজকের দিনে বাংলাদেশে প্রচলিত মৃর্ত্যুদণ্ডের বিধান সম্বলিত সকল আইনের ধারাসমূহ রদ ও রহিত করার উদাত্ত্ব আহবান জানাচ্ছি। একই সাথে অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী সামাজিক ফ্যাক্টরগুলো চিহ্নিতপূর্বক সেগুলো আমুলে নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সকল প্রকার গুরুত্বর ও যঘন্য অপরাধ হ্রাস হবে বলেই মনে করি। সেজন্য সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারদণ্ড যতেষ্টতাই, মৃর্ত্যুদন্ড কখনো কোনও অবস্থায় কাম্য হতে পারে না, বরং মৃর্ত্যুদন্ডের পরিবর্তে আমৃর্ত্যু কারাদন্ডের বিধান করে তার যথাযথ প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।


লেখকঃ মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী; জাস্টিসমেকার্স ফেলো, সুইজারল্যান্ড; ইমেইলঃ saikotbihr@gmail.com; মোবাইলঃ ০১৭২০৩০৮০৮০


No comments:

Post a Comment