বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি ও পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ূন কবির বাচ্চুকে রোববার রাতে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এক ঘণ্টা পর বরগুনার গোয়েন্দা পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। ওই আইনজীবীকে কৌশলে এক নারীকে দিয়ে অশ্লীল ছবি তুলে মুক্তিপণও দাবি করা হয়।
জানা যায়, ওই আইনজীবী নিত্যদিনের মতো রোববার রাত ৯টার সময় বরগুনায় তার ল চেম্বারে কাজ করে বাসায় ফেরার পথে একজন এসে আইনজীবীকে বলেন- স্যার আমার বোন অসুস্থ। তিনি একটি মামলা করবেন। দয়া করে আমাদের বাসায় চলুন।
আইনজীবী রিকশায় চড়ে বরগুনা স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে চারতলা একটি ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতেই পেছন থেকে আরও দুইজন ছেলে আইনজীবীর পিছু নেয়। চারতলায় উঠার সঙ্গে সঙ্গে একজন যুক্ত হয়। চারজন মিলে আইনজীবীকে একটি রুমে ঢুকিয়ে মারধর শুরু করে।
কিল-ঘুসি মারে আর বলে তুই কট। একটু পরে এক যুবতী এসে রুমে ঢুকে আইনজীবীর সঙ্গে প্যান্ট খুলে অশ্লীল ছবি তুলে চলে যায়। দুর্বৃত্তদের মধ্যে শাহিন নামের একজন আইনজীবীকে বলে তোর বউকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা দিতে বল। যদি না বলিস তাহলে তোকে খুন করব। আইনজীবী ভয়ে তার স্ত্রীকে ফোন করে টাকা নিয়ে বরগুনা স্টেডিয়ামের পাশে আসতে বলেন। কেন স্টেডিয়ামের পাশে আসতে বলেছেন- এ জন্য নির্যাতনের মাত্রা তারা আরও বাড়িয়ে দেয়।
আইনজীবীর স্ত্রী মিনারা নিশি বলেন, আমি ফোন পেয়ে বরগুনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম শিকদারকে জানাই। তিনি পুলিশকে জানালে বরগুনা থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি দল তাকে খোঁজার চেষ্টা করেন। রাত ৯টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত আইনজীবীর মোবাইল ফোনের লোকেশন বরগুনা স্টেডিয়ামের অশপাশে দেখা যায় বলে নিশ্চিত করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।
স্ত্রী মিনারা নিশি আরও বলেন, রাত ৯টার দিকে তার ননদকে ফোন করে আমার স্বামী এক লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলেন। পরে আমি আমার স্বামীকে ফোন দিলে তিনি জানান, আমাকে বাঁচাতে চাইলে এখনই এক লাখ টাকা নিয়ে চলে আসবে। এরপর তার ফোন বন্ধ পাই।
ডিবির অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি আমরা জানার পর অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ অনুসন্ধান করতে থাকি। বরগুনা থেকে বের হবার বিভিন্ন পথে বসানো হয় চেকপোস্ট। রাত সাড়ে ১০টার পরে আহত অবস্থায় অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির বাচ্চু তার বাসায় ফিরে আসেন। পরে সব খুলে বলেন।
তিনি বলেন, ওই আইনজীবী তার স্ত্রীকে টাকা নিয়ে আসতে বললে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে তারা পলিয়ে যায়। আমরা আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় অভিযান চালাই। ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বাসার চার তলার ওই ফ্ল্যাটে বাড়ির মালিকের ছেলে আরিফ একা থাকেন বলে জানা যায়। তবে আরিফ জানান, তার কাছ থেকে পাশের ফ্লাটের শাহিন নামের এক লোক চাবি নিয়েছিল। শাহিন ওই সময় থেকে পলাতক। আরিফকে রাতে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। রাতে চিকিৎসার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হুমায়ূন কবির বাচ্চুকে।
শহিদুল ইসলাম সোমবার সকালে জানান, বাড়ির মালিকের ছেলে আরিফকে আইনজীবী শনাক্ত করতে না পারায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার পাশের ফ্লাটের শাহিনসহ অন্যরা পলাতক। বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মদ বলেন, এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব। বরগুনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিনা আক্তার বলেন, আইনজীবীর চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে মামলা করব।
https://bartabazar.com/archives/448077
============================================================
Advocate Shahanur Islam | An Young, Ascendant, Dedicated Human Rights Defender, Lawyer and Blogger in Bangladesh, Fighting for Ensuring Human Rights, Rule of Law, Good Governance, Peace and Social Justice For the Victim of Torture, Extra Judicial Killing, Force Disappearance, Trafficking in Persons including Ethnic, Religious, Sexual and Social Minority People.
No comments:
Post a Comment